• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

হাটবাজারে সুপারি বিক্রি করে সংসার চালান মুক্তি যোদ্ধা আবু তালেব

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ০২ আগস্ট ২০২৩

সাইফুল ইসলাম, সিংগাইর প্রতিনিধি:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়াদিয়ে, দেশকে ভালবেসে আবু তালেব জীবন বাজি রেখে পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ব করেছিলেন। স্বাধীনতার বায়ান্ন বছর পার হলেও পাননি মুক্তি যোদ্ধার স্বীকৃতি । দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করলেও দরিদ্রতার হাত থেকে মুক্তি পাননি একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযুদ্ধা আবু তালেব । তিনি মানিকগঞ্জ -২ আসনের হরিরামপুর উপজলার বাল্লা ইউনিয়নের ঘীরের গ্রামের কৃষক মৃত শেখ মানিক মিয়ার পুত্র। আবু তালেব তিন কন্যা সন্তানের জনক। পিতার দরিদ্র সংসারে আবু তালেব লেখা পড়ার সুযোগ পাননি। সুঠাম দেহের অধিকারী আবু তালেব তরুণ বয়সে কৃষি কাজ ফুটবল, লাঠিখেলা ও হাডুডু খেলে শৈশব কৈশোর কাটান। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সামান্য জমিটুকু বিক্রি করে কন্যা সন্তানদের শিক্ষিত করেন। জীবনের মায়া ত্যাগ করে ১৯৭১ সালে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পশ্চিম দক্ষিণ দিকে ২ নং সেক্টরে আব্দুর রউফও মেজর আঃ হালিমের অধীনে মালন্চি, আলোকদিয়া পাটুরিয়া শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের জাফরগজ্ঞ এলাকাতে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । যার প্রমাণ স্বরূপ মেজর হায়দার ও তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান আতাউলগনি ওসমানীর স্বাক্ষরিত তিনটি সনদ ও রয়েছে । তিন মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ের মাষ্টাস ডিগ্রি পাশ করেন। । সন্তানদের লেখা পড়া করাতে গিয়ে সবর্স্ব খোয়ান আবুতালেব। আবু তালেব একজন প্রকৃত মুক্তি যোদ্ধা হওয়া সত্বেও মুক্তি যোদ্ধা সনদ না থাকায় কন্যারা সরকারি চাকরি থেকে হয়েছেন বঞ্চিত । মেয়ে চাকুরি না পাওয়ায় হতাশায় ভোগছেন তিনি। জীবনের ক্রান্তিলগ্নে এসে সত্তোবর্ধ আবু তালেব বিভিন্ন হাট বাজেরে মাটিতে চাটাই বসিয়ে সুপারি বিক্রি করে কোন রকম সংসার চালাচ্ছেন। তিন মেয়েকে বিবাহ দিয়েছেন । জমি বলতে সামন্য ভিটে বাড়ী ছিল তাও তিন মেয়েকে লিখে দিয়েছেন। এখন মেয়েদের কাছেই থাকেন। ইউনিয়ন, উপজেলা , জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন জনের নিকট ধর্না দিয়েও মুক্তি যোদ্ধার ভাতা তালিকাভুক্ত হতে পারেনি তিনি৷ সর্বশেষ এ উপজেলায় সম্প্রতি ১৭৫ জন মুক্তি যোদ্ধা যাচাই বাচাই হয়। এর মধ্যে ১৪ জন মুক্তি যোদ্ধা চুড়ান্ত ভাবে তালিকাভুক্ত হলেও তার নাম ঐতালিকা ভুক্ত হয়নি । বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুক্তি যোদ্ধা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েও অনেক ক্ষেত্রে সনদ না থাকায় অপমান অপদস্ত হতে হয় তাকে। এখন বয়স হয়েছে,শরীরে অসুখ বিসুখ বাসা বেধেছে আগের মত কাজ কর্ম করতে পারেননা। সরকারি সুযোগ সুবিধা বলতে বয়স্ক ভাতার কাড ছাড়া আর কোন সুযোগ সুবিধা তার কপালে জোটেনি। জীবনের তাগিদে হাটবাজারে ঘুরেঘুরে সুপারি বিক্রি করে সংসার চালান ঔই মুক্তি যোদ্ধা । একান্ত স্বাক্ষাতকারে আবু তালেব বলেন আমি যেন মৃত্যুর আগ মুক্তি যোদ্ধার তালিকায় স্থান পায় সেই আকুতি রইলো।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads